বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
ক্রাইম সিন ডেস্ক: দক্ষিণাঞ্চলে ১১ বছরের উর্ধ্বের প্রায় ৫০ ভাগ মানুষের দেহে করোনা প্রতিরোধক টিকার দুটি ডোজ প্রয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৮ লাখ ৬০ হাজার ছাত্র- ছাত্রীর প্রথম ডোজ এবং ১ লাখ ৮০ হাজারকে দ্বিতীয় ডোজের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হুমায়ুন শাহিন খান জানিয়েছেন।
অপরদিকে নগরীতেই ৩ লাখ ৭৩ হাজার জনকে প্রথম ডোজ ও ২ লাখ ৭১ হাজারকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে। এ নগরীতে প্রায় ৬৫ হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে প্রথম ডোজের এবং ২৩ হাজারকে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেয়া সম্ভব হয়েছে বলে নগর ভবন জানিয়েছে। তবে এ নগরীতে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহনকারীর মধ্যে এখনো লক্ষাধিক ডোজের ফারাক রয়েছে। প্রথম ডোজ গ্রহনকারী লক্ষাধিক মানুষ ক্ষদে বার্তা পাবার পরেও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহনের জন্য কেন্দ্রে হাজির হচ্ছেন না বলে নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে।
তবে এ নগরীতে মাত্র ৫টি টিকাদান কেন্দ্র চালু থাকায়ও অনেকে অহেতুক বিড়ম্বনা এড়াতে ঐসব কেন্দ্রে হাজির হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। উপরন্তু স্থান অভাবে এক সপ্তাহ এ নগরীর ছাত্র- ছাত্রীদের টিকা প্রদান বন্ধ ছিল। তবে ৩০ জানুয়ারী থেকে শহিদ মিনার সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে পুনরায় ছাত্র-ছাত্রীদের টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন হার এখনো ৪২%-এ উপরে।
তবে এর পরেও গোটা দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনের কোন বালাই নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনও তাদের দায়িত্ব ভুলে গেছেন বলেই মনে করতে শুরু করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ। মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায়ও এ অঞ্চলের ৬ জেলায় নতুন করে ৩৭৭ জনের দেহে করোনা সংক্রমন শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমনের এ সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় ৪৮ জন কম হলেও কয়েকটি জেলায় তা বেড়েছে। নগরীতেই গত ২৪ ঘন্টায় ৬২ জন সহ বরিশাল জেলায় ১৪৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
নগরী ছাড়াও জেলার উজিরপুর, গৌরনদী, বাকেরগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী ও আগৈলঝাড়ায় করোনা সংক্রমন ক্রমে নাজুক আকার ধারন করছে। বরিশাল ছাড়াও গত ২৪ ঘন্টায় পিরোজপুরে ৫৮ জন, ভোলাতে ৫৫, পাটুয়াখালীতে ৪৮, ঝালকাঠীতে ৪৭ এবং বরগুনাতেও ২৪ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। গত অক্টোবরে ২১৭ জন আক্রান্তের মধ্যে প্রথম ১৫ দিনে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল।
নভেম্বরে ৬৬ জন ও ডিসেম্বরে ২২ জন আক্রান্ত হলেও কোন মৃত্যু ছিল না। কিন্তু জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহের পরেই পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। প্রথম ১০ দিনে ৩৮ জন আক্রান্ত হবার পরে পরবর্তী ২০ দিনে ৩ হাজার ৩২ জন সহ জানুয়ারী মাসে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩ হাজার ৭০ জনে। এমনকি প্রায় সাড়ে ৩ মাস পরে গত মাসেই বরগুনা ও ভোলাতে দু জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমনে । গত মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৯ হাজার ৪৭ জনে। এরমধ্যে নগরীতে প্রায় ১২ হাজার সহ বরিশাল জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৯ হাজার ৮৩৩ জনে। নগরীতে ১০২ জন সহ জেলায় মারা গেছেন ২৩০ জন।
ভোলাতে ৭ হাজার ৩৭২ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৯২ জন। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৬২ জন, মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। পিরোজপুরেও ৫ হাজার ৯৩৭ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৮৩ জন।
সর্বাধিক সংক্রমনের ঝালকাঠিতেও ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৫০ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট এ জেলায় গত ১৫ দিন ধরে সংক্রমন পরিস্থিতি খুবই নাজুক। আর সর্বাধিক মৃত্যুহারের বরগুনাতেও ইতোমধ্যে ৪ হাজার ১৯৩ জন আক্রান্তের মধ্যে ৯৯ জন মারা গেছেন। আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবে গত ২৪ ঘন্টায় ৮৮ জন সহ ৪৫ হাজার ১৯৬ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।